মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে দলিল জালিয়াতি; সাব রেজিস্ট্রার কারাগারে

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

খালেকুজ্জামান লাল কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি// কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলায় প্রায় ৩৫ বছর আগে মারা যাওয়া এক নারীকে জীবিত দেখিয়ে অন্যের নামে জমির দলিল রেজিস্ট্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজীবপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম ও অপর আসামি জহুরা খাতুনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।


রবিবার দুপুরে মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করে কুড়িগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ এ আদেশ দেন। আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) প্রদীপ রায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অভিযুক্তরা হলেন, সাব-রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম ও জহুরা খাতুন। এদের মধ্যে নজরুল ইসলাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের গছিডাঙা গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের ছেলে। আর জহুরা রাজীবপুর উপজেলার বদরপুর গ্রামের মজিবর রহমান খাজার স্ত্রী।

এর আগে, আদালতে রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ১৫ মার্চ রাজিবপুর থানায় আব্দুল করিম নামে এক ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের নহর শেখের স্ত্রী ও মামলার বাদী আব্দুল করিমের দাদী দৌলতন নেছা ৩৫ বছর আগে মারা যান। এরপর তার নামে থাকা ৫৪ শতাংশ জমি তার ওয়ারিশরা ভোগদখল করে আসছিলেন। কিন্তু উপজেলার গোল্ডেন লাইফ একাডেমি নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইসমাঈল হোসেন তার মা জহুরা খাতুনকে দৌলতন নেছা সাজিয়ে দলিল লেখক নুরুন্নবী সরকারসহ কয়েকজনের সহযোগিতায় ২০২০ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি জমিটির ৫০ শতাংশ গোল্ডেন লাইফ একাডেমির নামে দানপত্র দলিল রেজিস্ট্রি করেন।

সাব-রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম সঠিকভাবে যাচাই না করেই জহুরা খাতুনকে মৃত দৌলতন নেছা হিসেবে জীবিত দেখিয়ে দলিল সম্পাদন করেন। এরপর একই বছর ৭ই ফেব্রুয়ারি গোল্ডেন লাইফ একাডেমির পরিচালক ইসমাঈল হোসেন জমিটি দখল নিতে গেলে বাদী আব্দুল করিম তাকে বাধা দেন।

ইসমাঈল হোসেন জাল দলিলটি প্রদর্শন করলে আব্দুল করিম বিষয়টি জানতে পেরে আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালত বাদীর আবেদন আমলে নিয়ে রাজীবপুর থানা পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। পরে পুলিশ হেড কোয়ার্টারের নির্দেশে সিআইডিকে মামলার তদন্তভার দেয়া হয়। সিআইডি মামলাটি তদন্ত করে সাব-রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম, দলিল লেখক নুরুন্নবী সরকার, জহুরা খাতুন ও গোল্ডেন লাইফ একাডেমির পরিচালক ইসমাঈল হোসেনসহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।

জিআরও প্রদীপ রায় জানান, আসামিরা এত দিন অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। রবিবার তারা আদালতে হাজির হয়ে স্থায়ী জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। অপর আসামিরা এখনও জামিনে রয়েছেন বলে জানান জিআরও।